History study materials | WBCS competitive exam history

Advertisements
HISTORY

পুষ্যভৃতি বংশ:

পূষ্যভৃতি বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন নরবর্ধন। এইসাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল থানেশ্বর। এই বংশের চতুর্থ রাজা ছিলেন প্রভাকর বর্ধন। তাঁর দুই ছেলে রাজ্যবর্ধন ও হর্ষবর্ধন। প্রভাকরবর্ধন মৌখরী রাজা গ্রহবর্মনের সঙ্গে তার কন্যা রাজ্যশ্রীর বিবাহ দেন। ৬০৫ খ্রিস্টাব্দে হূণ আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে তিনি মারা যান। এরপর তার জ্যেষ্ঠপুত্র রাজ্যবর্ধন সিংহাসনে বসেন। মালবরাজ দেবগুপ্ত ও গৌড়রাজ শশাঙ্ক একযােগে মৌখরী রাজ্য আক্রমণ করে গ্রহবর্মনকে হত্যা করে রাজ্যশ্রীকে বন্দী করে। রাজ্যবর্ধন তার সেনাদল নিয়ে কনৌজে গিয়ে মালবাজ দেবগুপ্তকে পরাস্ত করেন কিন্তু শশাঙ্ক রাজ্যবর্ধনকে হত্যা করেন। এরপর রাজ্যবর্ধনের কণিষ্ঠ ভ্রাতা হর্ষবর্ধন ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন এবং ঐ বছর থেকে (৬০৬ খ্রি.) চালুকরেন ‘হর্ষসম্বত’ বা ‘হর্ষাব্দ।

ইতিহাস

হর্ষবর্ধন :

হর্ষবর্ধন থানেশ্বরের সিংহাসনে বসেন তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতারমৃত্যুর পর। পাে-নি বা ডান্ডি নামে এক অমাত্যের অনুরােধে হর্ষবর্ধন কনৌজের শূন্য সিংহাসনে বসেন। তিনি কনৌজে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। তিনি বলভীর বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করে সেখানকার শাসক দ্বিতীয় ধ্রুবসেনকে পরাস্ত করেন। এই ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায় নৌশশী তাম্রপট থেকে। হর্ষবর্ধন চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর কাছে পরাস্ত হন। দ্বিতীয় পুলকেশীর সভাকবি রবিকীর্তির ‘আইহােল প্রশস্তি থেকে এই ঘটনা জানা যায়। হর্ষবর্ধন পল্লবশাসক প্রথম মহেন্দ্রবর্মনকে পরাস্ত করেন। বাণভট্টের ‘হর্ষচরিত’ থেকে জানা যায় যে হর্ষবর্ধন শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন এবং শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ জয় করেন। হর্ষের রাজ্যসীমা ছিল উত্তরভারত, রাজস্থান, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার
ও উড়িষ্যা। তার সাম্রাজ্যের বাইরে ছিল কাশ্মীর, কামরূপ ও নেপাল। বাণভট্টের মতে হর্ষবর্ধন পঞ্চভারত জয় করেন। এই পঞ্চভারত হল
কনৌজ, বাংলা, দ্বারভাঙা, পাঞ্জাব ও উৎকল। চালুক্য শিলালিপিতে এজন্য তাকে ‘উত্তরপথনাথ’ বা ‘সকলােত্তরপথনাথ’ বলা হয়েছে। হর্ষবর্ধনের রাজত্বকাল ৬০৬-৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ‘শিলাদিত্য ও রাজপুত্র’ উপাধি নেন।

হর্ষবর্ধনের শাসনব্যবস্থা:

হর্ষবর্ধন গুপ্ত সাম্রাজ্যের মতাে রাজ্যশাসন করতেন। তার সেনাবাহিনীতে ছিল ৬০০০০ হস্তিবাহিনী ও এক লক্ষেরও বেশি অশ্বারােহী। হর্ষবর্ধনের প্রাদেশিক শাসনকর্তার উপাধি ছিল ‘লােকপাল।বিষয়পতিরা ছিলেন জেলার শাসনকর্তা। কুমারমাত্ররা ছিলেন শিক্ষানবিশ মন্ত্রী ও কর্মচারী। মহাসন্ধিবিগ্রহিক ছিলেন বিদেশ মন্ত্রীদের প্রধান।মহাবলাধিকৃত’ ছিলেন সেনাবাহিনীর প্রধান। হর্ষবর্ধন যে রাজস্ব আদায় করতেন তা চারটি ভাগে খরচ হত। যথা—(১) রাজ্যশাসন ও ধর্মীয়উপাসনা (২) রাজকর্মচারীদের বেতন ও ভরণপােষণ (৩) বুদ্ধিজীবী ও গুণীদের বৃত্তি (৪) বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়কে দান। তার সময় ফসলের ভাগ ভূমিরাজস্ব হিসাবে নেওয়া হত। বণিকরা যে শুল্ক দিততার নাম ‘হিরণ্য’। হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালের বিবরণ থেকে জানা যায় বাঁশখেরা’তাম্রপট, নালন্দশীল, সােনপৎ তাম্রপট, মধুবনী তাম্রপট এবং দ্বিতীয় পুলকেশীর আইহােল শিলালেখ থেকে। হর্ষবর্ধন প্রথম জীবনে ছিলেন শৈব। তিনি ৬৩১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্তছিলেন শৈব। পরে হর্ষবর্ধন মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের অনুরাগী হন। হিউয়েন সাঙের সম্মানে তিনি বৌদ্ধ সম্মেলন আহ্বান করেন কনৌজে। এই সম্মেলনে ২০ জন সামন্ত ও মিত্র রাজা ভাস্করবর্মা ও কয়েকহাজার বৌদ্ধ পণ্ডিত যােগ দেন। হিউয়েন সাঙকে এই সম্মেলনের সভাপতি করা হয়।কনৌজের এই সম্মেলনের পর হর্ষবর্ধন প্রয়াগের দান মেলায় যােগ দেন।প্রতি ৫ বছর অন্তর প্রয়াগের গঙ্গা ও যমুনার সঙ্গমস্থলে এই মেলা বসত। এই মেলার নাম ‘মহামােক্ষ পরিষদ’। মেলাতে প্রথমদিন বুদ্ধ, দ্বিতীয় দিন সূর্য ও তৃতীয় দিনে শিবের উপাসনা করা হত। এই সঙ্গে চলত দান। তাঁর রাজকোষের পাঁচ বছরের জমা অর্থ হর্ষবর্ধন এখানে দান করতেন। হর্ষবর্ধন ছিলেন বিদ্যোৎসাহী ও ধর্মপ্রাণ। উড়িষ্যা জয়ের পর তিনি । বৌদ্ধপণ্ডিত জয়সেনকে আশিটি গ্রাম দান করেন। তিনি ছিলেন নালন্দা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপােষক। তিনি নিজে তিনটি নাটক লেখেন। সেগুলি।হল রত্নাবলী, নাগানন্দ’ও ‘প্রিয়দর্শিকা। তার সভাকবি ছিলেন বাণভট্ট।বাণভট্টের লেখা বইগুলি হল ‘হর্ষচরিত’, কাদম্বরী’ও ‘পার্বতি পরিণয়।বিখ্যাত চৈনিক পর্যটক হিউয়েন সাঙ হর্ষের সময় ভারতে আসেন। তারলেখা ভ্রমণ বৃত্তান্ত হল ‘সি-ইউ-কি’। এছাড়াও যৌর্য ও ভট্টহরি নামে
দুজন পণ্ডিত তার রাজসভায় ছিলেন।

Note: PDF file attached very soon

Advertisements

Leave a Comment

Advertisements
Button
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now