স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের পুনর্গঠন
ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ, 1947 সালের 15 আগস্টের আগে পশ্চিমবঙ্গ বলে কোনো রাজ্য ছিল না। তখন অবিভক্ত বাংলাকে ‘বঙ্গদেশ’ বলা হত। সেই বঙ্গদেশ থেকে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটির প্রশাসনিক অঞ্চলের উদ্ভবের পর্যায়সমূহ-
স্বাধীনতার পূর্বে রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পুনর্গঠন
1947 সালে দেশভাগের সময় বাংলাও বিভক্ত হয়েছিল। অবিভক্ত বাংলার তিনভাগের একভাগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গঠিত হয় এবং বাকি ভাগ চলে যায় তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ)। 1947 সালে ইংরেজ আইনজীবী র্যাডক্লিফ ব্রাউনের নেতৃত্বে একটি বাউন্ডারি কমিশন গঠিত হয়েছিল।
তিনি তখন পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশের) মধ্যে সীমানা চিহ্নিত করেছিলেন। বাংলা ভাগ হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ ছিল ধর্ম। সেই সময় সংখ্যাগুরু হিন্দু এবং মুসলিম নয় এমন সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি গঠিত হয়েছিল। অন্যদিকে, মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল।
স্বাধীনতার পরে রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পুনর্গঠন:
স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক বা প্রশাসনিক এলাকার পুনর্গঠন, সংযোজন ও বিয়োজন ঘটেছে। যেমন-
1. 1950 সালে তৎকালীন দেশীয় রাজ্য কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়।
2. 1956 সালে বিহার রাজ্য থেকে পূর্ণিয়া ও মালভূমি এলাকা পুরুলিয়া জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়।
3. 1954 সালে পূর্বতন ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর-গৌরহাটি পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়।
4. 1956 সালে বিহারের ইসলামপুর মহকুমাকে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার সাথে যুক্ত করে মহানন্দা করিডর তৈরি করা হয়েছিল।
5. 1986 সালে 24 পরগনা জেলা ভেঙে উত্তর 24 পরগনা ও দক্ষিণ 24 পরগনা গঠিত হয়।
6. 1988 সালে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার পার্বত্যাংশ নিয়ে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ নামে একটি স্বশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।

7. 1992 সালে পশ্চিম দিনাজপুর জেলাকে ভেঙে উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর-এই দুটি জেলা তৈরি করা হয়। 1992 সালে কোচবিহার জেলা ও বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত মেখলিগঞ্জ, কুচলিবাড়ি অঞ্চলে তিন বিঘা নামে একটি করিডর বাংলাদেশকে লিজ দেওয়া হয়।
8. 2002 সালের 1 জানুয়ারি মেদিনীপুর জেলা ভেঙে পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গঠিত হয়।
9. 2014 সালের 25 জুন জলপাইগুড়ি জেলা ভেঙে আলিপুরদুয়ার জেলার সৃষ্টি হয়।
10. 2017 সালের 14 ফেব্রুয়ারি দার্জিলিং জেলা ভেঙে কালিম্পং জেলা সৃষ্টি হয়।
11. 2017 সালের 4 এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভেঙে ঝাড়গ্রাম জেলা সৃষ্টি হয় এবং 7 এপ্রিল বর্ধমান জেলা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা দুটি সৃষ্টি হয়।
- ক্ষেত্রমান অনুসারে বৃহত্তম জেলা-দক্ষিণ 24 পরগনা
- ক্ষেত্রমান অনুসারে ক্ষুদ্রতম জেলা-কলকাতা
- জনসংখ্যা সবথেকে বেশি যে জেলায়-উত্তর 24 পরগনা
- জনসংখ্যার 100% পৌরবাসী যে জেলায়-কলকাতা
- 2001-2011 দশকীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার-13.84%
- সর্বাধিক সাক্ষরতাযুক্ত (2011) জেলা-পূর্ব মেদিনীপুর
- সর্বনিম্ন সাক্ষরতাযুক্ত (2011) জেলা-উত্তর দিনাজপুর
- পশ্চিমবঙ্গের লিঙ্গানুপাত (2011)-প্রতি হাজার পুরুষে 950 জন মহিলা
- সর্বাধিক তপশিলি উপজাতি (ST) যুক্ত জেলা-দক্ষিণ 24 পরগনা
- সর্বাধিক তপশিলি জাতি (SC) যুক্ত জেলা-পুরুলিয়া
- সবথেকে বেশি আন্তর্জাতিক সীমানা আছে যে দেশের সঙ্গে-বাংলাদেশ
- সবথেকে কম আন্তর্জাতিক সীমানা আছে যে দেশের সঙ্গে-নেপাল
- সবথেকে বেশি সীমানা আছে যে প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে-ঝাড়খণ্ড
- সবথেকে কম সীমানা আছে যে প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে-সিকিম
- পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা (2011)-91347736 জন।
- পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব (2011)-1084 জন/বর্গকিমি
- পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম প্রতিবেশী দেশ-বাংলাদেশ