General knowledge | human blood | competitive exam

Advertisements

ডিয়ার স্টুডেন্ট ,

  নীচের ছকে বিজ্ঞান বিভাগের রক্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (লোহিত রক্ত কনিকা, শ্বেত রক্ত কনিকা, অনুচক্রিকা, হিমোগ্লোবিন)  বিবৃতি মূলক ভাবে দেওয়া হোল,  pdf file  খুব তাড়াতাড়ি    update দেওয়া হবে । 

রক্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য
রক্ত সংজ্ঞা রক্ত একরকম অস্বচ্ছ, লবণাক্ত, ক্ষারধর্মী তরল যোেগ কলা।
বৈশিষ্ট্য ১) রক্ত একরকম তরল যােগ কলা। ২) রক্ত ঈষৎ লবণাক্ত।৩) রক্তে কোশীয় উপাদানের তুলনায় ধাত্রের পরিমাণ বেশি থাকে। ৪) রক্ত ক্ষারধর্মী। ৫) রক্ত মেসােডার্ম থেকে উৎপত্তি হয়। ৬) স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পক্ষীদের রক্ত উষ্ণ এবং মাছ, উভচর ও সরীসৃপ প্রাণীদের রক্ত শীতল।
অবস্থান • বদ্ধ সংবহনতন্ত্র বিশিষ্ট প্রাণীদের রক্ত হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠে এবং রক্তবাহে অবস্থান করে। • মুক্ত সংবহনতন্ত্র বিশিষ্ট প্রাণীদের রক্ত হিমােসিল, ল্যাকুনা এবং হৃৎপিণ্ডের গহ্বরে থাকে।
বর্ণ • কয়েকটি অমেরুদণ্ডী প্রাণী ছাড়া বেশিরভাগ প্রাণীর (বিশেষ করে মেরুদণ্ডী প্রাণীর) রক্তের রং লাল। রক্তে হিমােগ্লোবিন নামে লৌহঘটিত প্রােটিন জাতীয় রঞ্জক থাকায় রক্তের রং লাল। • অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তরসে এবং মেরুদণ্ডী প্রাণীদের লােহিত রক্তকণিকায় হিমােগ্লোবিন থাকে। • পতঙ্গ শ্রেণির প্রাণীদের (আরশােলা, ফড়িং, প্রজাপতি ইত্যাদি) রক্তে কোনাে রঞ্জকপদার্থ না থাকায় এদের রক্ত বর্ণহীন। কবচী শ্রেণির প্রাণীদের (চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি) রক্তরসে হিমােসায়ানিন নামে তাম্রঘটিত রঞ্জক পদার্থ থাকায় এদের রক্ত নীলাভ হয়।
উপাদান ১) রক্তরস বা প্লাজমা (৫৫%)। ২) রক্তকণিকা বা করপাসল (৪৫%)।
মানবদেহে রক্তের পরিমাণ একজন সুস্থ, স্বাভাবিক উচ্চতা ও ওজনবিশিষ্ট (উচ্চতা ৫ ফুট এবং ওজন ৭০ কেজি)। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মানুষের দেহে রক্তের পরিমাণ প্রায় ৫ লিটার এবং মহিলার দেহে এর পরিমাণ ৪.৫ লিটার।
লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
লোহিত রক্তকনিকা (Red Blood Corpuscles) সংজ্ঞা হিমােগ্লোবিন নামে শ্বাস-রঞ্জক যুক্ত, অক্সিজেন পরিবহণে সক্ষম লাল রক্তকণিকাকে লােহিত রক্তকণিকা (Erythrocyte) বলে।
আকার মানুষের পরিণত লােহিত রক্তকণিকা গােলাকার ও দ্বি-অবতল হয়। পরিণত লােহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিয়াস থাকায় লােহিত রক্তকণিকা দ্বি-অবতল হয়।
আয়তন গড় ব্যাস ৭.২ um.
সংখ্যা একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতি ঘন মিলিমিটার বা মাইক্রোলিটার রক্তে লােহিত রক্তকণিকার সংখ্যা হল গড়ে ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ এবং প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী লােকেদের রক্তে লােহিত রক্তকণিকার সংখ্যা হল ৪.৫ মিলিয়ন বা ৪৫ লক্ষ।
গঠন প্রতিটি লােহিত রক্তকণিকা একটি লাইপাে-প্রােটিন নির্মিত কোশ-ঝিল্লি পরিবেষ্টিত থাকে। কোশ-ঝিল্লির মধ্যে ধাত্র বা স্ট্রোমা থাকে। ধাত্রে হিমােগ্লোবিন বা লিপিড (৩৫%), প্রােটিন (৬০%) ও সামান্য কার্বোহাইড্রেট থাকে। উল্লেখ্য, মানুষের পরিণত লােহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না।
উৎপত্তি ও ক্রম-পরিণতি উৎপত্তি: ভ্রূণ অবস্থায় জ্বণের ভ্যাসকুলােসা অঞ্চল থেকে এবং জন্মের একমাস পর্যন্ত যকৃৎ ও প্লীহা থেকে। ললাহিত রক্তকণিকার সৃষ্টি হয়। জন্মের পর লােহিত রক্তকণিকা লাল অস্থি মজ্জার হিমােসাইটোব্লাস্ট কোশ থেকে সৃষ্টি হয়। ক্রমপরিণতির দশা: হিমােসাইটোব্লাস্ট → প্রােএরিথ্রোব্লাস্ট → প্রারম্ভিক নরমােব্লাস্ট → মাধ্যমিক নরমােব্রাস্ট → পরবর্তী নুরমােব্রাস্ট → রেটিকিউলােসাইট → পরিণত লােহিতকণিকা।
আয়ু গড় আয়ু ১২০ দিন।
কাজ ১) শ্বসঅঙ্গ থেকে কলাকোশে এবং কলাকোশ থেকে শাসঅঙ্গে যথাক্রমে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহণ করে। ২) রক্তের সক্রিয়তা বজায় রাখে। ৩) অম্ল ও ক্ষারের সমতা বজায় রাখে। ৪) রক্তের পজিটিভ ও নেগেটিভ আয়নের সাম্যাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
"শ্বেত রক্তকণিকা (White BloodCorpuscles)" সংজ্ঞা রক্তে অবস্থিত নিউক্লিয়াসযুক্ত, বর্ণহীন ও অনিয়তাকার রক্তকণিকাকে শেত রক্তকণিকা (Leucocyte) বলে ।
আয়তন শ্বেত রক্তকণিকার ব্যাস নির্দিষ্ট থাকে না। এদের ব্যাস ৮-১৮ pm হয়।
আকার শ্বেত রক্তকণিকার নির্দিষ্ট কোনাে আকার নেই। তবে কোনাে কোনাে শ্বেত রক্তকণিকা দেখতে অনেকটা অ্যামিবার মতাে।
সংখ্যা প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা হল ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার।
গঠন প্রতিটি শ্বেত রক্তকণিকা একটি লাইপােপ্রােটিন নির্মিত কোশ-ঝিল্লি পরিবেষ্টিত থাকে। আবরণীর মধ্যে সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস উপস্থিত থাকে। নিউক্লিয়াস গােলাকার, বৃক্কাকার এবং কয়েকটি খণ্ড বিশিষ্ট হয়। সাইটোপ্লাজম দানাযুক্ত বা দানাবিহীন হয়।
উৎপত্তিও ক্রম-ও পরিণতি উৎপত্তি: শ্বেত রক্তকণিকা অস্থিমজ্জা, প্লীহা এবং লসিকাগ্রন্থি থেকে উৎপত্তি হয়। শ্বেত রক্তকণিকার মাতৃ কোশগুলি হল- মায়েলােব্লাস্ট, লিম্ফোব্লাস্ট এবং মনােব্লাস্ট। ক্রমপরিণতির দশা: (i) মায়েলােব্লাস্ট → পােমায়েলােসাইট → মেটামায়েলােসাইট → পরিণত শ্বেতকণিকা। (ii) লিম্ফোব্লাস্ট → বৃহদাকার লিম্ফোসাইট → মধ্যমাকার লিম্ফোসাইট → ক্ষুদ্রাকার লিম্ফোসাইট। (iii) মনােব্লাস্ট → মেনােসাইট → মনােসাইট।
আয়ু গড় আয়ু ১ থেকে ১৫ দিন।
কাজ শ্বেত রক্তকণিকার কাজ ৫ প্রকার- নিউট্রোফিল- ফ্যাগােসাইটোসিস পদ্ধতিতে রােগ-জীবাণু ধ্বংস করে। ইওসিনােফিল- ইওসিনােফিল ও বেসােফিল শ্বেত রক্তকণিকা হিস্টামিন নিঃসরণ করে দেহে এলার্জি প্রতিরােধ করে। বেসােফিল- হেপারিন নিঃসরণ করে রক্তবাহে রক্ততঞ্চন রােধ করে। মনােসাইট- ফ্যাগােসাইটোসিস পদ্ধতিতে রােগ-জীবাণু ধ্বংস করে। এছাড়া মনােসাইট শ্বেত রক্তকণিকা প্লাজমা প্রােটিন থেকে ট্রিফোন নামে রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে কলাকোশের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। লিম্ফোসাইট- অ্যান্টিবডি সৃষ্টি করে।
অণুচক্রিকা সংজ্ঞা রক্ত তঞ্চনে সাহায্যকারী নিউক্লিয়াস বিহীন ক্ষুদ্র রক্তকণিকাকে অণুচক্রিকা (Thrombocyte) বলে।
আকার অণুচক্রিকা আকারে গােল, ডিম্বাকার এবং বেম আকৃতি বিশিষ্ট হয়।
আয়তন গড় ব্যাস ২.৫ um.
সংখ্যা প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে অণুচক্রিকার সংখ্যা হল ২,৫০,০০০ থেকে ৪,৫০,০০০।
গঠন অণুচক্রিকা হল লাইপােপ্রােটিন নির্মিত পর্দা বেষ্টিত অনেকটা ডিম্বাকার রক্তকণিকা এবং এর সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াস থাকে না। অণুচক্রিকার সাইটোপ্লাজমে গলগিবস্তু, মাইটোকনড্রিয়া, অন্তঃকোশ জালক এবং ৫০ থেকে ১০০টি দানা থাকে।
উৎপত্তি ও ক্রম-পরিণতি উৎপত্তি: অণুচক্রিকা লাল অস্থিমজ্জায় মেগাক্যারিওসাইট কোশের ক্ষণপদ থেকে সৃষ্টি হয়। ক্রমপরিণতির দশা: হিমােসাইটোব্লাস্ট → মেগাক্যারিওসাইট → থ্রম্বােসাইট (অণুচক্রিকা)।
আয়ু গড় আয়ু ৩ দিন।
কাজ ১) অণুচক্রিকার প্রধান কাজ হল রক্ততঞ্চনে সহায়তা করা। রক্তক্ষরণের সময় অণুচক্রিকা থ্রম্বােপ্লাস্টিন নিঃসরণ করে, যা প্রার্থম্বিনকে গ্রুম্বিনে পরিণত করে। ২) অণুচক্রিকা রক্তজালিকার ক্ষতিগ্রস্ত আন্তঃআবরণীর গায়ে এঁটে গিয়ে মেরামতির কাজকে দ্রুততর করে।
হিমোগ্লোবিন সংজ্ঞা: লৌহঘটিত ক্রোমােপ্রােটিন জাতীয় যে শ্বাসরঞ্জক রক্তে 0, এবং Co, পরিবহণ করে তাকে হিমােগ্লোবিন বলে।
অবস্থান: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের লােহিত রক্তকণিকায় এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তরসে থাকে।
পরিমাণ: প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের 100 মিলিলিটার রক্তে হিমােগ্লোবিন থাকে 14.5 গ্রাম এবং স্ত্রীলােকেদের ক্ষেত্রে 13.5 গ্রাম।
উপাদান: হিমােগ্লোবিন লৌহঘটিত পদার্থ হিম (4%) এবং সরল প্রােটিন গ্লোবিন (96%) নিয়ে গঠিত। এক অণু হিমােগ্লাবিন চারটি হিম একক ও চারটি পেপটাইড শৃঙ্খল দ্বারা গঠিত।
কাজ: (i) হিমােগ্লোবিন 0, পরিবহণ করে, হিমােগ্লোবিন 0,-এর সঙ্গে যুক্ত অক্সিহিমােগ্লোবিন যৌগ গঠন করে অক্সিজেনকে কলাকোশে পরিবহণ করে। (ii) হিমােগ্লোবিন কলাকোশ থেকে CO,-কে কার্বামিনােহিমােগ্লোবিন যৌগ গঠন করে শ্বাসঅঙ্গে পরিবহণ করে। (ii) হিমােগ্লোবিন রক্তে বাফার হিসেবে কাজ করে রক্তে অম্ল ও ক্ষারের সমতা বজায় রাখে। (iv) হিমােগ্লোবিন থেকে বিলিরুবিন, বিলিভারডিন, স্টারকোবিলিনােজেন (মলের রঞ্জক), ইউরােবিলিনােজের (মূত্রের রঞ্জক) তৈরি হয়।
Advertisements
Advertisements
Button
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now